সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি:পটুয়াখালী বাউফলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বহিস্কার আতংক। ছড়িয়ে পরেছে অভিভাবকদের মধ্যেও। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার সূধি মহলে নিন্দার ঝড় বইছে। জানাগেছে, বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে বেশ কিছু বছর থেকে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে রেষারেষি চলে আসছিল। গত শনিবার গনিত বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভ্যানুতে। ভ্যানুটিতে অংশ গ্রহন করে ৩৪০ জন পরিক্ষার্থী। সৃজনশীল পরীক্ষা শুরু হলে কিছুক্ষণ পরেই অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ক্যালকুলেটার নিয়ে যায় বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বাউফল সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলেও তাদরকে বহিস্কার করার কথা বলে ভয় দেখান ভ্যানুর সহ সচিব এবং একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কক্ষ পরিদর্শক। ওই সময় পরীক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পরে।
বিষয়টি ওই ভ্যানুর হল সুপার মো: সোহরাব হোসেনের নজরে আসলে তিনি বলেন পরীক্ষার্থী প্রোগ্রাম লেখা ক্যালকুলেটার ছাড়া সকল ক্যালকুলেটার ব্যবহার করতে পারবে বলে তিনি সকল ক্যালকুলেটার ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটার ব্যাবহারের কথা থাকলেও তাহা মানতে নারাজ ভ্যানুর কক্ষ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম টিপু। তার সাথে একই বাক্য ব্যবহার করেন ভ্যানুর সহ-সচিব বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানার বেগম। বিষয়টি অভিভাবকরা জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাহায্য চান। পরীক্ষা শেষ না হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করে বের হয়ে আসে এবং বিষয়টি অভিভাবকদের অবহিত করেন। এরপরই শুরু হয় নৈরাজ্য। ছাত্ররা হামলা চালায় ভ্যানুর সহ-সচিব জাহানারা বেগম ও পরিদর্শক নজুরুল ইসলাম টিপুর উপর। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা যৌথ হামলা চালায় সহ-সচিবের রুমে। এসময় তাদেরকে ভিতরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ভাংচুর করেন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের রুমের দরজা জানালা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এরপরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে, বাউফল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন ও অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাকসুদুর রহমান মুরাদসহ স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে সহ-সচিব জাহানার বেগম জানান, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরেই তাদের ক্যালকুলেটার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থী শিফাতের মা অভিযোগ করেন, কক্ষ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম টিপু বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। একই অভিযোগ করেন পরীক্ষার্থী জাবিরের মা খাদিজা বেগম। শিক্ষার্থী হাচিব, ইমতিয়াজ ও রাসেলসহ একাধিক পরীক্ষার্থীদের বাবা মায়ের অভিযোগ তাদের ভিতরে যে আতংঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং যে ৩০ মিনিট ক্যালকুলেটার নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে সে ক্ষতি পূরন কে দিবে? শিক্ষার্থীদের অভিযোগ যেকোন সময় যে কোন অজুহাতে পরিক্ষার হলে দায়িত্বরত কক্ষ পরিদর্শকরা ও ভ্যানু সচিব তাদেরকে বহিস্কার করে দিতে পারেন। ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভ্যানুতে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন কালিন সময়ে টিপু স্যার পরীক্ষার্থীদের গায়ে কলম ছুড়ে মেরেছিলেন বলেও জানান তারা। এ বিষয়ে বাউফল কেন্দ্রের সচিব নার্গিস আখতার জানান, কেন্দ্রের দায়িত্বরত ১০টি স্কুল প্রধান অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সভায় সিদ্ধান্ত নেন আর কোন পরীক্ষায় তাকে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব দেয়া হবেনা। তাছাড়াও যারা কক্ষ পরিদর্শকের প্রশিক্ষণ নিবেন তারাই শুধু মাত্র দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু ভ্যানুর সহ-সচিব জাহানার বেগম সে সিদ্ধান্তকে উপক্ষো করে নজরুল ইসলাম টিপুকে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব দেওয়ায় ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
Leave a Reply